News TopLink logo

  তাবেদারী নয়, সত্যের মুখোমুখি |
Ad Image Here



এই খবরের কোনো ভিডিও নেই |

ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে দীপাবলি উৎসব ও মেলার উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর

Monday, November 13, 2023
  


আগরতলা, ১৩ নভেম্বর: মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ধর্মীয় পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। রবিবার সন্ধ্যায় ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে দীপাবলি উৎসব ও মেলার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে কল্যাণসাগরে কল্যাণ আরতিতে অংশগ্রহণ করেন ও ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের কাছে রাজ্যের কল্যাণে প্রার্থনা করেন। তারপর তিনি মন্দির সংলগ্ন ধন্যমাণিক্য মুক্তমঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে ৩ দিনব্যাপী দীপাবলি মেলার উদ্বোধন করেন। দীপাবলি উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রার্থনায় প্রতিবছর দীপাবলি উৎসব পালন করা হয়। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ সহ দেশ বিদেশ থেকে প্রতিবছর পুণ্যার্থীগণ এখানে সমবেত হন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ধর্মীয় পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশে বর্তমান সরকার আন্তরিক। প্রসাদ প্রকল্পে মাতাবাড়ির ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরকে নবরূপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই মাতাবাড়ি মন্দিরে পুণ্যার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান, হোটেল ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সংখ্যা। অধিক সংখ্যায় পুণ্যার্থীদের আগমনের ফলে কর্মসংস্থানের পথও উন্মুক্ত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাতাবাড়ির দীপাবলি উৎসবের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের ধারা এখনও বহমান। তাই দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে এটি একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি বলেন, মাতাবাড়ির দীপাবলি উৎসব ও মেলা জাতি জনজাতি অংশের মানুষের মিলনক্ষেত্র হিসেবেও পরিচিত। আগামীদিনেও এই উৎসব সম্প্রীতির বার্তা বহন করবে এবং এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গঠনে সহায়ক ভূমিকা নেবে। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশের প্রত্যেকটি ধর্মীয় স্থানকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। প্রসাদ প্রকল্পে মাতাবাড়ি চত্বরে চলতে থাকা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে এই মন্দিরের সৌন্দর্য আরও বাড়বে। এই উৎসব ও মেলায় পুণ্যার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এবার মেলা ২ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩ দিন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দীপাবলি উৎসব ও মেলা শুধুমাত্র সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের মেলা নয়, প্রত্যেক ধর্ম ও জাতির মিলন মেলা হচ্ছে এই দীপাবলি উৎসব। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা। তিনি এই মেলার গুরুত্ব এবং আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জমাতিয়া হদাঅক্রা মনিন্দ্র মোহন জমাতিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন মাতাবাড়ি উৎসব ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক অভিষেক দেবরায়। তিনি মেলায় আগত সকল পুণ্যার্থী, দর্শনার্থীদের সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এই মেলা উপভোগ করার জন্য আহ্বান জানান। এছাড়া অনুষ্ঠান মঞ্চে তিনি উপস্থিত অতিথিদের সকলের হাতে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরীর প্রতিকৃতি সম্বলিত স্মারক উপহারও তুলে দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, গোমতী জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি দেবল দেবরায়, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, উদয়পুর পুরপরিষদের চেয়ারপার্সন শীতল চন্দ্র মজুমদার, মাতাবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন সুজন কুমার সেন, জেলা পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অতিথিগণ দীপাবলি উৎসবের উপর স্মরণিকার আবরণও উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিগণ মেলায় বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি প্রদর্শনী মণ্ডপগুলি ফিতা কেটে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। এদিকে এদিনই ১৯৩৮ সালে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আগরতলার ঐতিহ্যবাহী ঊমা মহেশ্বর মন্দিরে ঠাকুর দর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। দীপাবলির পূণ্যতিথিতে রবীন্দ্রভবন চত্বরে ৮ নং টাউন বড়দোয়ালী মন্ডল যুবমোর্চা আয়োজিত শ্যামা মায়ের আরাধনায় অংশগ্রহন করেন তিনি। এর পাশাপাশি আগরতলা রেলওয়ে স্টেশন রোড সংলগ্ন সার্বজনীন কালীপূজা কমিটি আয়োজিত শ্যামা মায়ের আরাধনায় শামিল হয়ে মায়ের কাছে সমগ্র রাজ্যবাসীর জন্য মঙ্গল কামনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা। এছাড়া দক্ষিণ ইন্দ্রনগরস্থিত কালী মন্দিরে শ্যামা মায়ের বন্দনায় সামিল হয়ে মায়ের আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। দীপাবলির পুজো পরিক্রমায় রাজধানীর মৌচাক ক্লাব, কল্যাণ সমিতি, সাহারা বয়েজ ক্লাবে আয়োজিত শ্যামা মায়ের আরাধনায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেই সঙ্গে দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে রবিবার রাতে আগরতলা অরুন্ধতীনগর পুলিশ লাইন মাঠে রাজ্য আরক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত শ্যামা মায়ের আরাধনা ও দৃষ্টিনন্দন আতসবাজি কার্যক্রমে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।