News TopLink logo

  তাবেদারী নয়, সত্যের মুখোমুখি |
Ad Image Here



এই খবরের কোনো ভিডিও নেই |

ত্রিপুরায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কারণে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে লক্ষ্ণৌর কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

Friday, December 22, 2023
  


আগরতলা, ২২ ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ ক্রমশ উন্নতির দিকে এগিয়ে চলছে। সিকিম সহ উত্তর পূর্বের ৮টি রাজ্যকে অষ্টলক্ষী নাম দিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে ত্রিপুরা অন্যতম একটি। ত্রিপুরাকে হিরা মডেল উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হিরা মডেলের কারণে জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে ইন্টারনেট, রেলওয়ে ও উড়ান যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা। এখানে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থাও বর্তমানে খুবই ভালো। বাইরে থেকে বিনিয়োগকারীরা ত্রিপুরায় বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসছেন। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌর কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির অটল বিহারী বাজপেয়ী সায়েন্টিফিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত 'ইন্টারন্যাশনাল জর্জিয়ান অ্যালামনি মিট ২০২৩'-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ১১৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি খুবই একজন সাধারণ মানুষ। আমি অসাধারণ কিছু নই। আমি খুবই গর্বিত ও আনন্দিত যে এই প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছি। এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এজন্য আয়োজকদের অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুষ্ঠানে ছাত্র জীবন ও পেশাগত জীবনের বিভিন্ন ঘটনাবহুল তথ্য তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। ডা: সাহা বলেন, ডেন্টাল এসোসিয়েশন অফ ত্রিপুরার সচিব হিসেবে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। তারপর সভাপতি হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু চাকরি জীবনে বারবার বদলি হতে হয়েছে। অনেক জায়গায় বদলি করা হয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টায় ত্রিপুরাতে এখন মেডিকেল কলেজ হয়েছে। একটি সরকারি, অন্যটি বেসরকারি পরিচালিত। একজন অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জন হিসেবে ত্রিপুরায় যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তবে একটা সময় কমিউনিস্টদের সরকার ছিল ত্রিপুরায়। কিন্তু সেই সরকারটার পরিচালনা একজন ভালো মানুষের উপর ছিল না। অবশেষে দেশকে পরিচালনার জন্য একজন সুযোগ্য ব্যক্তি এলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে সামিল হয়েছেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দিয়ে পৃষ্ঠাপ্রমুখ ইনচার্জ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিষ্ঠা সহকারে পালন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আরো বলেন, ত্রিপুরায় দীর্ঘ ৩৫ বছরের বাম শাসনে খুন, সন্ত্রাস, মারপিট সহ নানা অঘটন সংঘটিত হয়েছে। যার কোন হিসেব নেই। ত্রিপুরার সার্বিক অবস্থা একেবারে খারাপ করেছিল কমিউনিস্টরা। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যতক্ষণ উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নতি হবে না ততক্ষণ দেশের উন্নতি হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক সহযোগিতার কারণে ত্রিপুরা এখন বিকাশের লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত জাতীয় সড়ক, উন্নত ইন্টারনেট পরিষেবা, উন্নত রেল যোগাযোগ ও উন্নত বিমান যোগাযোগ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। এখন ত্রিপুরা থেকে ১৭/১৮টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করছে। রাজ্যের শেষ সীমান্ত সাব্রুম পর্যন্ত ব্রডগেজ রেল পরিষেবা চালু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা খুবই একটি শান্তি প্রিয় রাজ্য। এখানে বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও খুবই ভালো জায়গায় রয়েছে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে কোন ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে নি। আর ত্রিপুরায় কোন গুন্ডাগিরি কোন অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না। ত্রিপুরা রাজ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার খুবই আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছে। মাত্র তিন মাসে জি + ৭ ডেন্টাল কলেজ গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে দুটি মেডিকেল কলেজ, একটি ডেন্টাল কলেজ, একটি নার্সিং কলেজ, ফার্মেসি কলেজ রয়েছে। এখন হোমিও ও আয়ুর্বেদ কলেজ গড়ে তুলতে হবে। যাতে ত্রিপুরায় একটি মেডিকেল হাব গড়ে তোলা সম্ভব হয়। শান্তির পরিবেশ থাকায় মানুষ এখন ত্রিপুরায় বিনিয়োগ করতে চাইছে। এখানে রয়েছে আমাজনের মতো পর্যটন কেন্দ্রও। তাই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিদের উদ্দেশ্যে ত্রিপুরায় একবার হলেও ঘুরে আসার আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার এয়ারপোর্ট এখন উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম সুন্দর ও সেরা এয়ারপোর্ট। কিছুদিনের মধ্যে এই এয়ারপোর্ট আন্তর্জাতিক মানের হতে চলেছে। যার প্রথম উড়ান শুরু হবে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টের সঙ্গে। পাশাপাশি অন্যের উপকার সাধনের জন্য কিছু করার বিষয়ে গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। দেশাত্মবোধের চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. অরুণ কুমার সাক্সেনা, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব দুর্গা শঙ্কর মিশ্র, কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর সোনিয়া নিত্যানন্দ, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর, জর্জিয়ান এলামনি এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি প্রফেসর পি কে শর্মা সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। এদিকে লক্ষ্ণৌর কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিরই অপর একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা অংশগ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার সময়ের বিভিন্ন বিষয়ের স্মৃতিচারণ করেন। ত্রিপুরা সম্পর্কেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা খুবই ছোট রাজ্য। এর জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐকান্তিক দৃষ্টিভঙ্গির কারনে বর্তমানে এই রাজ্য দ্রুত বিকাশের দিশায় এগিয়ে চলছে। ত্রিপুরায় ১৯টি জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি খুবই উন্নত মানের। প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী শচীন দেববর্মণ, আর ডি বর্মণরা ত্রিপুরারই সুযোগ্য সন্তান। অথচ আগে ত্রিপুরা সম্পর্কে অনেকেই জানতেন না। এই ত্রিপুরারই মেয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার। যাদের হাত ধরে ত্রিপুরার নাম সারা দেশে উজ্জ্বল হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক, উত্তরপ্রদেশের মেডিকেল এডুকেশনের প্রতিমন্ত্রী ভি সরণ সহ ছাত্রছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকা ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।