News TopLink logo

  তাবেদারী নয়, সত্যের মুখোমুখি |
Ad Image Here



এই খবরের কোনো ভিডিও নেই |

মুহুরী অমিত আচার্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আরো ২!

Thursday, April 25, 2024
  


নিজস্ব প্রতিনিধি : পশিম জেলা আদালতের মুহুরী অমিত আচার্য হত্যা মামলায় আরো দুজনকে গ্ৰেপ্তার করল পশ্চিম থানার পুলিশ।আইনজীবী দিগবিজয় মোদক ও শিবদুত বিরোয়া ক্লার্ক কে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়। এদিন সকালে উজান অভয়নগর ও ইন্দ্রনগর মুসলিম পাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এপর্যন্ত এই মামলায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গত ৩ এপ্রিল আইনজীবী রাজেশ সরকার ও মুহুরী রাজীব দেব কে গ্ৰেপ্তার করে পশ্চিম থানার পুলিশ। মৃত্যু মানেই যন্ত্রনার, বেদনার। যে কোন মৃত্যুই অনাকাঙ্ক্ষিত। কিন্তু আদালত চত্বরে আইনজীবী ও মুহুরীর প্রহারে কোন বিতর্কিত মুহুরীর মৃত্যু হবে তা কোনভাবেই সভ্য সমাজ বা সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না। যেহেতু কোন মানুষের ক্ষমতা নেই কাউকে প্রাণ দেয়ার সেহেতু কারোর অধিকার নেই প্রাণ হরণ করার। তাছাড়া বর্তমান সরকারের নীতি হল অপরাধের জিরো টলারেন্স, সুতরাং সবাই আশা করছেন যেকোন অপরাধে সাজা হবেই আসামিদের। গত ৫ সেপ্টেম্বর আগরতলা পশ্চিম জেলা ও দায়রা জজের আদালত চত্তরে অমিত আচার্য নামে এক মুহুরীকে বেশ কয়েকজন আইনজীবি এবং ক্লার্ক মিলে মারধোর করেছিল। এই ঘটনায় গুরুতর আহত অমিত আচার্যের গত ২৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় কলকাতায়। ঘটনায় মৃত অমিত আচার্যের পরিবারের অভিযোগ মূলে পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। পশ্চিম থানায় রুজু হওয়া মামলা নম্বর ১৭২/২০২৩ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় আইনজীবি রাজেশ সরকার, গোপাল সিং, অনির্বান তলাপাত্র এবং আইনজীবিদের ক্লার্ক শিবদূত বড়ুয়া, সুদীপ দেব ও রাজীব দেবের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। এই মামলায় পুলিশ গত ১২ নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে গোপাল সিং নামের এক আইনজীবিকে বড়দোয়ালি থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর অনির্বান তলাপাত্র নামে আরেক আইনজীবী কে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ এই ঘটনায় বাকী অভিযুক্তদের খোজ জারী রেখে চলিছিলো। পুলিশের একটি দল চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের এই ঘটনায় তল্লাসি অভিযানে কোলকাতা পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছে বলেও খবর। এবার পুলিশের হাতে আরো দুই অভিযুক্ত ধরা পরে বুধবার। তারা ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো। পশ্চিম থানার ওসি পরিতোষ দাস জানান মামলার তদন্তকারী অফিসার রঞ্জিত দাস বুধবার সকালে তাদের গ্রেপ্তার করে, আজই তাদের তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করে। পশ্চিম থানার ওসি আরও জানান, কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়, যারা এই খুনের ঘটনায় যুক্ত তাদের প্রত্যেককেই শাস্তি পেতে হবে। পুলিশ কাউকেই ছেড়ে কথা বলবে না। আইনজীবী গোপাল সিং দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। অবশেষে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত গোপাল সিং কে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ। এরপর আইনজীবী অনির্বান তলাপাত্র, পরে রাজেশ সরকার ও মহুরী রাজীব দেব। একে একে সকলেই ধরা পড়বে। এদিকে বুধবার ধৃতদের আদালতে তুললে তাদেরকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠায় আদালত। এদিকে মৃত অমিত আচার্যের মা সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন। সন্তান হারানোর ব্যথা যে হাঁড়িয়েছে, সেই বোঝে, যারা তার কোল খালি করেছে তাদের জেল ফাসি চান তিনি, তাদের মায়েরও বুক খালি হবে বলে দাবী করেন তিনি। সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গেলে বলতে হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং মুহুরী অমিত আচার্য জেলা আদালতের ৪ নম্বর ফ্লোরের বাইরে স্টিল চেয়ারে বসা ছিল। ঠিক তখন আইনজীবী রাজেশ সরকার অমিতের সাথে জিআরপিএস এর একটি মামলা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, তখন আইনজীবী গোপাল সিং, রাজেশ সরকার, অনির্বাণ তলাপাত্র , মুহুরী শীবদূত বড়ুয়ারা মহুরী অমিত আচার‍্য‍্যকে কিল ঘুসি-লাথি মারতে শুরু করে। জেলা আদালতের চতুর্থ তলার বিল্ডিং এর সিসি টিভি ফুটেজে সম্পূর্ণ ঘটনা রেকর্ডিং হয় বলে দাবী অমিত আচার্যের স্ত্রী সঞ্চিতা সাহা আচার্যীর। তাছাড়া উনার আরোও অভিযোগ জেলা আদালতের চতুর্থ ফ্লোরে অমিত কে মারধরের পর লিফটের দরজা বন্ধ করে আইনজীবী রাজেশ সরকার, গোপাল সিং, বিভাস দেববর্মা, পুনরায় মারধর করে অমিতকে। সঞ্চিতা দেবীর অভিযোগ অমিত কে এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি লাথির পর ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশনে নেওয়া হয় সেখানেও তাকে মারধর করা হয়। বার এসোসিয়েশন থেকে পুলিশ কোর্টের পুলিশরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে। পুলিশ কোর্ট থেকে গুরতর অবস্থায় আইজিএম হাসপাতালে প্রেরন করা হয় আহত মহুরী অমিত আচার্য্যকে । আইজিএম হাসপাতালে তার অবস্থা বেগতিক দেখে জিবি হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা। অমিতের কিডনি ফুসফুসে গুরতর আঘাত পাওয়ার ফলে অমিত কে উন্নত চিকিৎসার জন্য বহিঃ রাজ্যে রেফার করে জিবিপি হাসপাতালের ডাক্তারবাবুরা। সঞ্চিতা দেবী ৬/৯/২৩ ইং তারিখে এফ আই আরে আরো উল্লেখ করেন আইনজীবী কিশলয় রায়, অনির্বাণ তলাপাত্র, রাজেশ সরকার, দেবদাস বক্সি, গোপাল সিং, ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। অবশেষে কলকাতার মুকুন্দপুরের আর এন টেগোর হাসপাতালে তীব্র যন্ত্রনায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়ে নিষ্ঠুর দুনিয়া থেকে চির বিদায় নেয় বিতর্কিত মুহুরী অমিত আচার্য। এই মামলায় এপর্যন্ত চার অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হলো, বাকীদের কবে নাগাদ জালে তুলে পুলিশ সেদিকে তাঁকিয়ে রাজ্যের আইনজীবী মহল সহ মৃত অমিতের পরিবার।