পানিসাগরে রাজ্যের প্রথম সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী
Tuesday, July 02, 2024
আগরতলা, ২ জুলাই: শিক্ষা ক্ষেত্রের পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে একাধিক সিন্থেটিক টার্ফ যুক্ত ফুটবল মাঠ, সুইমিং পুল, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও অন্যান্য ক্রীড়া পরিকাঠামোগত সুবিধা সংযুক্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি আগরতলার ভোলাগিরি মাঠকে আন্তর্জাতিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার উত্তর জেলার পানিসাগরস্থিত রিজিওনাল কলেজ অফ ফিজিক্যাল এডুকেশন পরিসরে "খেলো ইন্ডিয়া" প্রকল্পে নবনির্মিত ডঃ অরুণাভ রায় সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাকের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলার রাজা যদি বলতে হয় তবে সেটা অ্যাথলেটিকস। অ্যাথলেটিকসে খেলাধুলার বিভিন্ন ধরণ থাকে। অলিম্পিকেও আমরা অ্যাথলেটিকসের দিকেই তাকিয়ে থাকি। এই সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাকের মাধ্যমে আগামীদিনে অ্যাথলেটদের সুবিধা হবে। ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্যে এখন বিভিন্ন সুবিধা হয়ে গেছে। খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দিশায় এই সরকার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্প শুরু করে। আর সেই প্রকল্পের সুফল হিসেবে আজকের এই সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাক।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, মানুষের মধ্যে খেলাধুলাকে যাতে আরো জনপ্রিয় করে তোলা যায় তারজন্য রাজ্য সরকার বিভিন্ন আধুনিক ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিয়েছে। এরমধ্যে সিন্থেটিক যুক্ত অনেকগুলি ফুটবল মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে রাজ্যে। সিন্থেটিক হকি মাঠ, সুইমিং পুল, অ্যাথলেটিক ট্র্যাক গড়ে তোলা হয়েছে। ওপেন জিম সহ অনেকগুলি বহুমুখী ক্রীড়া ভবন তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটা করা হবে। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে উঠায় এখন ছেলেমেয়েদের অনেক সুবিধা হয়েছে ও তারা ভালো করতে পারছে। সম্প্রতি আগরতলায় ৬৭ তম জাতীয় স্কুল যোগাসন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা ৬টি সোনা, ২টি রূপো সহ একটি তাম্র পদক পেয়েছে। আগরতলায় অনুষ্ঠিত খেলো ইন্ডিয়া (ইউনিভার্সিটি) গেমসের যোগা ইভেন্টে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা দলগতভাবে রৌপ্য পদক পেয়েছে। ২০২১ - ২২ অর্থ বছরে ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে ৫০টি ওপেন জিম নির্মাণের সিদ্ধান্ত করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৩১টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। বাকিগুলোর কাজ চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়া উন্নয়ন প্রকল্পে ধারাবাহিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এনএসআরসিসিতে বাস্কেটবল, ভলিবল কোর্ট, ইন্ডোর হল এবং তেলিয়ামুড়াতে ক্রীড়া দপ্তরের অফিসার নিয়োগ সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী স্টেট ট্যালেন্ট সার্চের অধীনে আমরা ৫২ জন মহিলা খেলোয়াড়কে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। এছাড়া আমি ক্রীড়ামন্ত্রী এবং আধিকারিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে অনুশীলনের সময় যাতে খেলোয়াড়দের সঠিক পুষ্টির দিকে নজর দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি মানে উন্নয়ন এবং আমরা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে কাজ করছি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৪ এর ১২ জানুয়ারি যুব দিবসে রাজ্যের ১০ জন কৃতি সন্তানকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। আগরতলার ভোলাগিরি মাঠকে আন্তর্জাতিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেখানে একটি প্রাকৃতিক ফুটবল মাঠ, একটি সুইমিং পুল, একটি মাল্টিপারপাস স্পোর্টস হল থাকবে। আমরা ডোনার মন্ত্রককে ৩৮.৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। জোলাইবাড়ি স্কুল মাঠ, কৈলাশহর টিলা বাজার স্কুল মাঠ সহ ৬টি মাঠের উন্নয়ন ও গ্যালারি নির্মাণ কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। খেলো ইন্ডিয়া স্কিমের অধীনে ধর্মনগর, খোয়াই, আমবাসা, সিপাহীজলা ও বিলোনিয়ায় মাল্টিপারপাস স্পোর্টস হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস, বিধায়ক যাদব লাল নাথ, জেলা সভাধিপতি ভবতোষ দাস, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, দপ্তরের অধিকর্তা পি কে দেব, উত্তর ত্রিপুরা জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
এদিকে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় এদিন প্রায় ৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিদ্যাজ্যোতি ও সর্বশিক্ষা অভিযানের আওতাধীন পানিসাগর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের দ্বারোদঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।