পিছিয়ে পড়া জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের গুণগত মানের শিক্ষা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার: মুখ্যমন্ত্রী
Monday, November 11, 2024
আগরতলা, ১১ নভেম্বর: বিশেষভাবে দুর্বল জনজাতি গোষ্ঠীর (পিভিটিজি) উন্নয়ন এবং জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানকে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকার। এই দিশাকে সামনে রেখে সরকার নিরন্তর কাজ করে চলছে।
সোমবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে সমগ্র শিক্ষা ত্রিপুরার উদ্যোগে আয়োজিত পিএম-জনমন হোস্টেল ভবনের ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে শিক্ষা দপ্তর রিয়াং জনজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীরা যাতে গুণগত মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করার জন্য হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। আর এই প্রকল্প ত্রিপুরার ৬টি জেলা ধলাই, গোমতী, খোয়াই, উত্তর ত্রিপুরা, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং উনকোটি জেলায় বাস্তবায়িত হবে। প্রথম পর্যায়ে, পিএম জনমন ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের জন্য ৭টি হোস্টেল এবং ২০২৪-২৫ এর জন্য আরও ৭টি হোস্টেল সহ মোট ১৪টি হোস্টেল অনুমোদন পেয়েছে। এরমধ্যে ১২টি হোস্টেলে ১০০টি শয্যা থাকবে। প্রতিটি হোস্টেলের জন্য ২৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে এবং ২টি হোস্টেলে ৫০টি শয্যা থাকবে। এরজন্য প্রতিটি হোস্টেলে ২৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে৷ এর মধ্য দিয়ে রিয়াং সম্প্রদায়ের ১,৩০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ১৪টি পরিকল্পিত হোস্টেলের মধ্যে ২টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আজ চারটি জেলার ৬টি ব্লকের ৬টি বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ১০টি হোস্টেল বিল্ডিংয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এই হোস্টেলগুলির মধ্যে ৬টি ছেলেদের জন্য এবং ৪টি মেয়েদের জন্য। এখানে ৯০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার সুযোগ থাকবে। এই ১০টি হোস্টেল নির্মাণে ব্যয় হবে ২৬.৬০ কোটি টাকা। আর ১৪টি হোস্টেলের জন্য মোট খরচ হবে ৩৭.৬০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এতে ১,৩০০ জন ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে৷ ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশেষভাবে দুর্বল জনজাতি গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন এবং এই গোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীদের গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা ও উপযুক্ত খাওয়ার থাকার ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করার জন্য চারটি জেলার ৬টি ব্লক এলাকায় হোস্টেল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলি বিশেষভাবে দুর্বল জনজাতি গোষ্ঠীর উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পিএম জনমনের মতো উদ্যোগ এই গোষ্ঠীকে সামনে নিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বকে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিয়েছেন এবং এই অঞ্চলে উন্নয়নের জন্য অসংখ্য প্রকল্প চালু করেছেন। আমাদের সরকার আপগ্রেডেড হোস্টেল, প্রি এন্ড পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ এবং বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে জনজাতি শিক্ষার্থীদের গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের জন্য কাজ করছে। ত্রিপুরায় রিয়াং একটি বিশেষভাবে দুর্বল জনজাতি গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃত। এই উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ৫৬,৮৫১ পরিবার এবং প্রায় ২.২৪ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর আমরা জনজাতি সম্প্রদায়ের সার্বিক বিকাশে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমরা প্রয়াত মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের উত্তরাধিকারকে সম্মান করি। এছাড়াও রাজ্যে ২১টি একলব্য স্কুলের মধ্যে ৫টির অধিক স্কুলে কাজ চলছে। যা আগামী বছরের মধ্যে শেষ হতে পারে। এই সরকার জনজাতি সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, এসসিইআরটি অধিকর্তা এল ডার্লং, সমগ্র শিক্ষার রাজ্য প্রকল্প অধিকর্তা এনসি শর্মা সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ।