News TopLink logo

  তাবেদারী নয়, সত্যের মুখোমুখি |
Ad Image Here



এই খবরের কোনো ভিডিও নেই |

রাজ্যে একটি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: মুখ্যমন্ত্রী

Tuesday, December 10, 2024
  


আগরতলা, ১০ ডিসেম্বর: প্রযুক্তিগত শিক্ষায় রাজ্যের একটি প্রসিদ্ধ নাম ত্রিপুরা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি(টিআইটি)। শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। এরমধ্যে রাজ্যে একটি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সদিচ্ছা থাকলে এবং ভালো চিন্তাভাবনা থাকলে না হওয়ার কোন কারণ নেই। পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে মোকাবিলায় নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। মঙ্গলবার নরসিংগড়স্থিত ত্রিপুরা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (টিআইটি) আয়োজিত রক্তদান শিবির ও নবনির্মিত অডিটোরিয়ামের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, যেকোন প্রতিষ্ঠানে একটা অডিটোরিয়াম থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অডিটোরিয়াম বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স করার ক্ষেত্রে একটি সহায়ক মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটি করে অডিটোরিয়াম গড়ে তুলতে চাইছে রাজ্য সরকার। ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যেকার সম্পর্ক খুবই গভীর। আমি নিজেও মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হওয়ার সুবাদে এই সম্পর্কের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারি। একটা প্রতিষ্ঠানে গুরু ও শিষ্যের মধ্যে যে পরম্পরা সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানের ফ্যাকাল্টিরাও খুবই উচ্চশিক্ষিত। তাই ছাত্রছাত্রীদের কাজ হচ্ছে শিক্ষকদের ভেতরে যা জ্ঞান রয়েছে সেটা বের করে নেওয়া। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বারবার বলছেন আগামীদিন তাদের হাতেই পৃথিবী যাদের কাছে জ্ঞান রয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সরাসরি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করেন। দেশকে উন্নয়নের দিশায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার কথা বলেন। তরুণ প্রজন্মকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিও গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। আর ছাত্র জীবনেই ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। শেখার জন্য এটাই ছাত্রছাত্রীদের প্রকৃত সময়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলাম। মুম্বাইতে রাজ্যের অনেক রোগী এবং অন্যান্য কাজে মানুষ যায়। কিন্তু সেখানে থাকার সমস্যা হয় তাদের। তাই মুম্বাই গিয়ে আমি সেখানে ত্রিপুরা ভবনের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা ঘুরে দেখি। কিছুদিন আগে দিল্লিতে গিয়েও নতুন ত্রিপুরা ভবনের জায়গা ঘুরে দেখি ও পর্যালোচনা করি। ডাঃ সাহা বলেন, একটা সময় ছিল এটাকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বলা হতো। বহু পুরনো। আমাদের আত্মীয়ও এখান থেকে পড়াশুনা করেছে। পরবর্তী সময়ে ৭০ এর দশকে পলিটেকনিক কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ ছিল। বোমাবাজি সহ ইত্যাদি হিংসাত্মক ঘটনা এই প্রতিষ্ঠানে লেগে থাকতো। সেসব ঘটনা মনে পড়লে দুঃখ হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ১৯টি আইটিআই রয়েছে। কিন্তু সেগুলি জরাজীর্ণ দশায় রয়েছে। তাই এগুলির আধুনিকীকরণের জন্য কিছুদিন আগে টাটা টেকনোলজির সঙ্গে আমাদের মৌ স্বাক্ষরিত হয়। তারা এগুলির আধুনিকীকরণে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। রাজ্য সরকারও বিনিয়োগ করবে। এই চুক্তির ফলে রাজ্যে বিনিয়োগের পাশাপাশি উন্নতমানের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে আইটিআই থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ আগামীদিনে বৃদ্ধি পাবে। কিছুদিনের মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়ে যাবে। তাদেরকেও সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে শান্তির পরিবেশ কায়েম রয়েছে। আর এতে বিনিয়োগকারীরা রাজ্যে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হচ্ছেন। সম্প্রতি আমি মুম্বাই সফরে গিয়ে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও এমডি মুকেশ আম্বানি ও তাঁর ছেলের সঙ্গে সাক্ষাত করি। প্রায় ৫০ মিনিটের দীর্ঘ আলোচনায় আমি তাদের ত্রিপুরায় বাঁশ, রাবার, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে অবগত করি। আর খুব সহসাই রিলায়েন্সের একটা টিম ত্রিপুরা সফরে আসবে বলে তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রেও অনেক এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক নয়ন সরকার, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা অনিমেষ দেববর্মা, টিআইটির অধ্যক্ষ বিজয় কুমার উপাধ্যায় সহ শিক্ষা দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকগণ। উল্লেখ্য, শিক্ষার সর্বাঙ্গীন বিকাশের লক্ষ্যে প্রায় ১৬০০ ছাত্রছাত্রী সম্বলিত এই মহাবিদ্যালয়ে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ৮৮৫ আসন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম। এদিন এই কলেজের এনএসএস ইউনিটের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে সকল রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন মুখ্যমন্ত্রী।